শুক্রবার ১৪ই রমজান, ১৪৪৬ হিজরি ১৪ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

জুলুম-নির্যাতনে ফল কি? তা যদি কেউ আপনার কাছে জানতে চায় তাহলে কি উত্তর দিবেন? তাকে ফিরাউনের নীল নদে সলিলসমাধির ঘটনাটি পড়তে বলবেন। আর মিসরের কায়রো যাদুঘরে ফিরাউনের যে লাশটা রাখা আছে, তা ইন্টারনেটের মাধ্যমে একবার দেখে নিতে বলবেন। এখানেই শেষ নয়! তাকে বলবেন, জালেমের দিকে জুলুমের ভয়াবহ শাস্তি বাঁধভাঙ্গা বন্যার ন্যায় ছুটে  আসছে। ইতিহাস চিৎকার করে বার বার এ-কথাই বলছে যে, তোমরা আমার কাছ থেকে শিক্ষা গ্র্রহণ কর এবং জালেম কে যুগেযুগে আল্লাহ পাক কি শাস্তি দিয়েছেন, তা অন্তরদৃষ্টি দিয়ে অবলোকন কর।

এমর্মে একটি ঘটনা আমি উল্লেখ করছি শিক্ষা গ্রনণের জন্য।

আল-মাজালিস নামক কিতাবে যায়েদ ইবনে আসলাম থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন  আমার পাশে এক ব্যক্তি বসা ছিল। তার ডান হাত গোড়া থেকে কাটা। হঠাৎ করে সে চিৎকার করে বলে উঠলঃ আমার এ অবস্থা যে ব্যক্তি দেখতেছে সে যেন কারও প্রতি জুলুম ও অত্যাচার না করে।

আমি তাকে বললাম তোমার ঘটনা কি? সে বললঃ একদা আমি সমুদ্রোপকুলে যাচ্ছিলাম। আমি এক হাবশির পাশ দিয়ে গমন করছিলাম। সে সাতটি মাছ শিকার করেছিল। একটি মাছ আমাকে দিয়ে দেয়ার জন্য বললে সে তা দিতে অস্বীকার করে। আমি জোর করে তার কাছ থেকে একটি মাছ ছিনিয়ে নিলাম। জোর পূর্বক নেয়া মাছটি ছিল জ্যান্ত। হঠাৎ করে মাছটি আমার আঙ্গুলে কামড় বসিয়ে দিল। এতে আমার আঙ্গুলে সামান্য একটু খুজলী হল। এতে আমার কোন কষ্টও হল না। মাছটি নিয়ে আমি বাড়ীতে পৌছলাম। গৃহিনী মাছটি রান্না করলে আমরা সবাই তা খেলাম। তার পর আস্তে আস্তে আমার খুজলির স্থানে ঘা হয়ে সেখানে পোকা হয়ে গেল। সমস্ত ডাক্তারদের সিদ্ধান্ত মতে আমার সে আঙ্গুলটি কেটে ফেললাম। ভাবলাম বোধ হয় সুস্থ হয়ে গেছি। কিন্ত না; কিছু দিন যেতে না যেতেই আমার হাতে আবার পোকা হয়ে গেল। তার পর আবার অপারেশন করে সামান্য কেটে ফেলা হল। এভাবে কাটতে কাটতে হাতের গোড় পর্যন্ত এল। এ জন্য আমি সর্বদা চিৎকার করে এ কথাই বলি যে, যারা আমাকে দেখতেছে; তারা যেন কার উপর জুলুন-অত্যাচার না করে। এ ঘটনা থেকে জালেম ও স্বৈরাচারীরা শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে যে, জুলুমের শাস্তি তাকে কিভাবে গ্রাস করে নেয় । এবং জালেম পৃথিবী থেকে চলে গেলেও সে যে শাস্তিতে গ্রেফতার হয়েছিলো তা পরবর্তীদের জন্য শিক্ষামূলক ইতিহাস হয়ে থাকে। যা থেকে পরবর্তী যুগের মানুষেরা শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে।

মহান আল্লাহ পাক আমদের এ ঘটনা থেকে শিক্ষা গ্রহণের তাওফীক দান করেন। আমীন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *